নাম সুপারিশের আগেই প্রকাশ করা জরুরি

নাম সুপারিশের আগেই প্রকাশ করা জরুরি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটি কেমন হয়েছে, তা তাদের কার্যক্রমে মূল্যায়ন হবে-এমন মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, জনআকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে নির্মোহ ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের নাম সার্চ কমিটির সুপারিশ করা উচিত।

আর এ সুপারিশের আগেই তা প্রকাশ করা জরুরি। অন্যথায় আগের দুই কমিশনের মতো সামনের কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থার ঘাটতি তৈরি হতে পারে। শনিবার সার্চ কমিটির গেজেট প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যুগান্তরের কাছে এসব মন্তব্য করেন দেশের তিনজন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ। তরা হলেন-সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ।

সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে ড. শাহদীন মালিক বলেন, সার্চ কমিটির সদস্যরা কিভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে কিভাবে ও কাদের নাম অনুসন্ধান করবেন, তা দেখে কমিটির কার্যক্রমের মূল্যায়ন হবে। সরকার সার্চ কমিটি গঠন করেছে। এখন দেখার বিষয়, সার্চ কমিটির অনুসন্ধানে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে কিনা। তবে আমি আশা করি, সার্চ কমিটি নাম সুপারিশ করার আগেই তা প্রকাশ করবে।

তাহলে আগামীতে কারা নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন সে সম্পর্কে জনগণ জানতে পারবেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যে আইনটি পাশ হয়েছে তাতে সার্চ কমিটি সম্ভাব্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম প্রকাশ করতে পারবে না-এমন কিছু বলা নেই। তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সার্চ কমিটি সুপারিশ করবে-সেটাই প্রত্যাশা করি।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সার্চ কমিটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলে ভালো কমিটি হয়েছে তা বলতে পারব। আশা করি তারা ভালো কিছু করবেন। তাদের ওপর সেই আস্থা রাখতে চাই। তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে আসীন হোক। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় কিনা-সেটাই দেখার বিষয়।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সার্চ কমিটিতে ছয়জন সদস্য রয়েছেন। তাদের চারজনই সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। বাকি দুজন রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দিয়েছেন। ওই দুজনও সজ্জন হিসাবে পরিচিত। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, তারা কী পদ্ধতিতে কোন প্রক্রিয়ায় নাম অনুসন্ধান করবেন। আমি আশা করব, যেই পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় নাম অনুসন্ধান করবেন সেটা সুপারিশের আগে প্রকাশ করবেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার পদে নাম সুপারিশের আগে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও তৈরি করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে পারেন। তাহলে জনগণও মতামত দিতে পারবে। এছাড়া যাদের নাম সুপারিশ করা হবে তাদের কোন যোগ্যতায় দেওয়া হলো সেটাও যেন প্রকাশ করা হয়।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, গত দুই নির্বাচন কমিশনে সিভিল সার্ভিস, সশস্ত্র বাহিনী ও জুডিশিয়াল বিভাগ থেকে কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার ওই ছকের বাইরে কাজ করতে হবে। যাদের যোগ্যতা আছে সে যেই বিভাগ বা পক্ষের হোক না কেন সেখান থেকে নাম বাছাই হওয়া উচিত। একইসঙ্গে যারা কমিশনার পদে নিয়োগ পেতে লবিং-তদবির করছেন, তাদের প্রথমেই অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে। তাহলেই নির্মোহ ব্যক্তিরা সামনে আসতে পারবেন। আমি সার্চ কমিটির ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে চাই।

0 মন্তব্যসমূহ

-------- আমাদের সকল পোস্ট বা নিউজ বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা থেকে নেয়া - প্রতিটি পোস্টের ক্রেডিট সেই পোস্টের শেষ ভাগে দেয়া আছে।