নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় ১৩ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ লাভলু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের মামলায় আদালত অভিযুক্ত ১৩ জনকেই ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত আসামিরা হলেন, নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন কনট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলু।
এই মামলার পলাতক আসামিরা হলেন, আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেক।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় শুনতে মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেই নারী, মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং আসামিদের স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা মধ্যবয়সী এক নারীকে ঘরে ঢুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে।
এ সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও ঘটনার একমাস পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে থাকা ওই নারীকে ওইদিনই উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
ওই ঘটনা সারা দেশে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। নিপীড়কদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন সংগঠন। এরপর বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্ণগ্রাফি আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় দুটি মামলা করেন ওই নারী।
পরে তিনি একই থানায় আরেকটি মামলা করেন, যেখানে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর এবং ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুই দফায় তাকে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয় স্থানীয় সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে।
গত ৪ অক্টোবর ওই ধর্ষণ মামলার রায়ে দেলোয়ার ও কালামকে যাব্বজীবন করাদণ্ড দেয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
0 মন্তব্যসমূহ