এবার নতুন শহরে হবে বাণিজ্য মেলা। নতুন শহর বলতে, পূর্বাচল। রাজউকের নতুন এই শহরে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন এবং আধুনিক সেন্টারে আয়োজন করা হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ঘটনাটি এবারই প্রথম ঘটছে। এর পর থেকে একই স্থানে একইভাবে ঘটতে থাকবে। অর্থাৎ, পূর্বাচলেই স্থায়ী হবে বাণিজ্য মেলা। এর আগে ১৯৯৫ সাল থেকে শেরেবাংলা নগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন শুরু হয়। সর্বশেষ গত বছরের জানুয়ারিতে বসে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। কিন্তু তীব্র যানজটের কারণ হওয়ায় মেলার স্থান পরিবর্তনের জোর দাবি উঠছিল।
একই সময় পূর্বাচলে কাঞ্চন ব্রিজ সংলগ্ন ৪ নম্বর সেক্টরে চলছিল বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারটি নির্মাণের কাজ। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর এর অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। ২০২০ সালের ৩০ নবেম্বর শেষ হয় নির্মাণ কাজ। চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শনী কেন্দ্রটি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ৯ বর্গফুট আয়তনের ৮০০টি স্টল রয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকেই নব নির্মিত সেন্টারে মেলা আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে এক বছর স্থগিত রেখে আগামী বছর সেখানে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে মূল শহরে যে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হতো সেটি থেকে মুক্তি মিলবে নগরবাসীর। এটিই আসলে বড় খবর। পাশাপাশি এর মধ্য দিয়ে, হোক সেটি বাণিজ্য মেলা, ডিসেন্ট্রালাইজেশনের একটি উদাহরণ সৃষ্টি হলো।
আরও অনেক কিছুর বেলায় এমন উদাহরণ সৃষ্টি করা যেতে পারে। সে যাই হোক, মেলা প্রসঙ্গে ফিরি। এবারও ১ জানুয়ারি থেকে মেলা আয়োজন করবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। মেলায় থাকছে ২২৫টি স্টল-প্যাভিলিয়ন। তবে করোনাকালীন নানা জটিলতা এখনও বর্তমান থাকায় কমছে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ। ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্কের কয়েকটি কোম্পানি মেলায় পণ্য পসরা সাজাবে। থাইল্যান্ডের একাধিক কোম্পানিও তাদের এদেশীয় প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মেলায় নেবে। প্রতিবছর ইরানের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ চোখে পড়ে মেলায়। এবার করোনা জটিলতায় দেশটি থাকতে পারছে না। মেলার পরিসরও কিছুটা ছোট হবে। পূর্বাচলে যাতায়াত নিয়েও আছে দুশ্চিন্তা। অবশ্য মেলা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিআরটিসির ৩০টি বাস পূর্বাচলে যাতায়াত করবে। কমলাপুর থেকে রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে বাণিজ্য মেলায় যাবে বাস। শেওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কুড়িল হয়ে বাণিজ্য মেলা পর্যন্তও বাস চলাচল করবে। আর ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ তো থাকছেই। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটি সূচনা হতে চলেছে।
ঢাকা নগর পরিবহনে যাতায়াত ॥ রাজধানীর গণপরিহন মানেই সীমাহীন বিশৃঙ্খলা। ভোগান্তি। বলা চলে, প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই এ অবস্থা চলছে। মাঝে মধ্যে ঠিকঠাক করার লক্ষ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয় বটে। ভাল ফল পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় গত রবিবার থেকে রাজধানীতে চালু করা হয়েছে ঢাকা নগর পরিবহন। বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটির পরীক্ষামূলক প্রকল্প এটি। এর আওতায় কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত সাড়ে ২৭ কিলোমিটার রুটে ৫০টি বাস চলাচল করছে। এগুলোর মধ্যে বিআরটিসির ৩০টি ডাবল ডেকার ও ট্রান্স সিলভা পরিবহনের ২০টি বাস রয়েছে। খুবই সুশৃঙ্খলভাবে সব নিয়ম মোটামুটি মেনে বাসগুলো চলাচল করছে বলেই জানা যাচ্ছে। টুকটাক বিড়ম্বনার কথা বাদ দিলে এখন পর্যন্ত আশাবাদী হওয়ার মতো খবরই বেশি আসছে। বাকিটুকু সময় বলে দেবে। আপাতত তাই অপেক্ষা।
পরীক্ষা পাসের আনন্দ ॥ করোনাকালে লেখাপড়া মোটামুটি শিকেয় উঠেছিল। দমবন্ধ একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ঘরে বসেও লেখাপড়া সেভাবে হয়নি। এ অবস্থায় গত ১৪ নবেম্বর সারাদেশে একযোগে শুরু হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। চলে ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন। পাস করেছে ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। পাসের হারও বেড়েছে ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ।
হ্যাঁ, সার্বিক বিচারেই ফল খুব ভাল। তাই পরীক্ষা পাসের আনন্দটাও বড় হয়ে সামনে এসেছে। তবে মুঠোফোনে ফল সংগ্রহ করা শিক্ষার্থীদের বড় অংশটি আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমবেত হয়নি। ক্যাম্পাসজুড়ে যে হৈ হুল্লোড় হয়, এবার সেটি অতো দেখা যায়নি। কিন্তু রাজধানীর মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি উধাও হয়ে গিয়েছিল ঠিকই। এ থেকে ধারণা করা যায় ঘরে ঘরে উদ্যাপন করা হয়েছে পরীক্ষা পাসের আনন্দ। তবে শুধু পরীক্ষা পাস নয়, মানবিক দেশপ্রেমিক ও সচেতন নাগরিক হওয়ার পরীক্ষায়ও আমাদের ছেলে মেয়েরা জিপিএ ফাইভ পেয়ে পাস করবে। ফল ঘোষণার দিনে এমন আশাও তাদের কাছে আমরা করতে চাই।
সূত্র - জনকণ্ঠ - মোরসালিন মিজান
হ্যাঁ, সার্বিক বিচারেই ফল খুব ভাল। তাই পরীক্ষা পাসের আনন্দটাও বড় হয়ে সামনে এসেছে। তবে মুঠোফোনে ফল সংগ্রহ করা শিক্ষার্থীদের বড় অংশটি আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমবেত হয়নি। ক্যাম্পাসজুড়ে যে হৈ হুল্লোড় হয়, এবার সেটি অতো দেখা যায়নি। কিন্তু রাজধানীর মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি উধাও হয়ে গিয়েছিল ঠিকই। এ থেকে ধারণা করা যায় ঘরে ঘরে উদ্যাপন করা হয়েছে পরীক্ষা পাসের আনন্দ। তবে শুধু পরীক্ষা পাস নয়, মানবিক দেশপ্রেমিক ও সচেতন নাগরিক হওয়ার পরীক্ষায়ও আমাদের ছেলে মেয়েরা জিপিএ ফাইভ পেয়ে পাস করবে। ফল ঘোষণার দিনে এমন আশাও তাদের কাছে আমরা করতে চাই।
সূত্র - জনকণ্ঠ - মোরসালিন মিজান
0 মন্তব্যসমূহ