রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না বিএনপিসহ ৭ দল

রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না বিএনপিসহ ৭ দল

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির ডাকা সংলাপে অংশগ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা সংলাপে যাবে না।

বিএনপি সংলাপ বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২০ দলীয় জোটের চারটি শরিক দলও সংলাপে যাচ্ছে না। এগুলো হলো :জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা (একাংশ), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, কল্যাণ পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ। এর বাইরে সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে। সংগঠনটির আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপকে ’একটি লোক দেখানো অর্থহীন রসালো সময়’ পার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। গণফোরামেরও সংলাপে অংশ নেওয়া না নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের একটি পক্ষ সংলাপে না যাওয়ার পক্ষে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছে।

এই রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সংলাপে যে প্রস্তাব দেওয়া হয় তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া কোনো প্রস্তাবের তোয়াক্কা না করে সরকার নিজেদের মতো কমিশন গঠন করে। এই প্রক্রিয়ায় আগের দুটি কমিশন গঠন করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন, সরকার পরিবর্তন ছাড়া নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সংলাপ করে কোনো লাভ নেই। আলোচনায় কোনো ফল হবে না। এই সংলাপের মাধ্যমে নতুন কিছু হবে না। বিএনপি গতকাল পর্যন্ত সংলাপের আমন্ত্রণ পায়নি। গতকাল পাঁচটি দল আমন্ত্রণপত্র পেয়েছে। 

বিএনপি জানিয়েছে, আমন্ত্রণ পেলেও সংলাপে যোগ দেবে না। তবে আমন্ত্রণ পেলে তারা কেন সংলাপে অংশ নেবে না এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠাবে বিএনপি। 

গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইত্তেফাককে বলেন, আমরা এখনো আমন্ত্রণ পাইনি। তবে আমরা সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা সংলাপে যাব না। সংলাপের নামে অর্থহীন তামাশা এবং কালক্ষেপণ চলছে। সরকার তাদের একজন আজ্ঞাবহ পুতুল নির্বাচন কমিশন আগেই ঠিক করে রেখেছে। 

সংলাপে যাবে না বাসদ: নির্বাচন কমিশন গঠনের ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে জানিয়ে দিয়েছে দলটি। ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বাসদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের কথা ছিল। দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, এর আগে দুইবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছি। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও সংলাপে গিয়েছি। ঐসব সংলাপে দলের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছিলাম, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। 

সিপিবিও যাবে না : আগামী ৩ জানুয়ারি সিপিবির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের সময় নির্ধারণ হয়েছে। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সংলাপের বিষয়বস্তু তো নতুন না। আমরা ২০১৬ সালেই প্রস্তাব দিয়েছি। যে এজেন্ডা গতবার ছিল, এবারও তাই। তাই নতুন করে আর এ বিষয়টি আসে না। 

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বরং রাষ্ট্রপতি সংসদের কাছে চিঠি পাঠাতে পারেন, এক মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করতে। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : সংগঠনটির আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি। আমরা এনিয়ে বৈঠক করব। পরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সংবিধানের ১১৮-২৬ ধারায় আইন প্রণয়নের জন্য সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। অথচ সরকার আইন প্রণয়ন না করে প্রতিবার জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথিত সংলাপের নামে একটি লোক দেখানো অর্থহীন রসালো সময় পার করে।

0 মন্তব্যসমূহ

-------- আমাদের সকল পোস্ট বা নিউজ বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা থেকে নেয়া - প্রতিটি পোস্টের ক্রেডিট সেই পোস্টের শেষ ভাগে দেয়া আছে।