ঘুষ ছাড়াই পুলিশে চাকরি, খুশিতে কাঁদলেন বাবা

ঘুষ ছাড়াই পুলিশে চাকরি, খুশিতে কাঁদলেন বাবা

কোনো টাকা ছাড়া ছেলে সাকিব হাসান বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে-এ আনন্দ ধরে রাখতে পারছিলেন না গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের ফরিদ আহমেদ। 

মোবাইল ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগে কাঁদছিলেন পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সী ফরিদ আহমেদ। মোবাইল ফোনে বলছিলেন, তোমার পোলার চাকরিটা হইছে। কোনো ট্যাহা লাগে নাই। ১৩৩ ট্যাহা খরচ অইছে। সাকিব এহন পুলিশ সদস্য। এ কথা বলেই স্ত্রীর সঙ্গে কথা শেষ করেন ফরিদ। 


সোমবার (০৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে ট্রেইনি রিক্রুটিং কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল মাইকে ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ। 

ফরিদ আহমেদ তার ছেলে সাকিব হাসানকে নিয়ে মাঠেই অবস্থান করছিলেন। ১৫ জনের পর যখন সাকিবের নাম ঘোষণা করা হয় তখনই আনন্দে কাঁদতে থাকেন ফরিদ। সাকিবের চোখও ছলছল করে উঠে। সাকিব জানান, ছোটবেলা থেকেই পুলিশ সদস্য হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন লালন করে আসছে। আজ তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আনন্দে নিজের অজান্তেই গাল গড়িয়ে অশ্রু ঝরছে। 

শুধু ফরিদ আর তার ছেলে সাকিব নয়, বিনা টাকায় চাকরি পাওয়ায় অনেককেই আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা গেছে মধ্য রাত পর্যন্ত। এ তরুণরা জানান, ‘শুনেছি, টাকা ছাড়া পুলিশের চাকরি হয় না। পুলিশের চাকরিতে যে কোনো টাকা লাগে না, আজ এর প্রমাণ আমরা নিজেরাই। আবেদন করতে মাত্র ১৩৩ টাকা লেগেছে। খরচ বলতে এ পর্যন্তই। কোনো ধরনের টাকা ছাড়েই নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৭১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। 
 
গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, ট্রেইনি রিক্রুটিং কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ২ হাজার ৮৪০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। টানা তিনদিনের শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা শেষে ৫৮৭ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। তাদের মধ্য থেকে ১৯৮ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ভাইভা পরীক্ষার মুখোমুখি হন তারা। ৭১ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। 

গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার মাধ্যমে মেধা ও যোগ্যতাভিত্তিক এ নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রার্থীরা  বেশ কয়েকটি  ধাপ পেরিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করে চূড়ান্ত তালিকায় আসতে পেরেছেন। 

তিনি বলেন, দালালরা যাতে প্রার্থীদের প্রতারিত করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করেছে। 

0 মন্তব্যসমূহ

-------- আমাদের সকল পোস্ট বা নিউজ বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা থেকে নেয়া - প্রতিটি পোস্টের ক্রেডিট সেই পোস্টের শেষ ভাগে দেয়া আছে।