জলবায়ু অভীষ্ট অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ চীন-রাশিয়ার অনুপস্থিতি

জলবায়ু অভীষ্ট অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ চীন-রাশিয়ার অনুপস্থিতি

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের সব নেতা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ এবং এর প্রভাব মোকাবিলার অভীষ্ট অর্জনের আলোচনায় সশরীরে উপস্থিত হলেও সেখানে প্রভাবশালী দুই দেশের নেতা নেই। চীন ও রাশিয়ার অনুপস্থিতিতে বিশ্বকে বাঁচাতে কার্বন নির্গমন হ্রাস করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার টার্গেট গ্রহণ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে জি-২০ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিযোগ করেছেন, চীন ও রাশিয়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে চীন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতবছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান, ২০৬০ সাল নাগাদ দেশটি কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন ধীরে ধীরে কমিয়ে আনবে। তবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী ও নীতিমালাবিষয়ক বিজ্ঞানীদের দল ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার বলছে, সে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে চীন এখনও যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান, ২০২৬ সাল থেকে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনবে চীন। দেশটি বিদেশে নতুন কোনো কয়লাচালিত প্রকল্প নির্মাণ করবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি। তবে বিভিন্ন দেশের সরকার ও পরিবেশবিদদের অভিযোগ, পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে না চীন।

বেইজিং-ভিত্তিক টিসিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে চীনকে। এর বদলে পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে।

প্যারিসভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট সায়েন্সের গবেষক ফিলিপ সিয়াইস জানান, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে হলে চীনকে পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন কেন্দ্রের সক্ষমতা কমাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে বিশ্বনেতারা সোমবার থেকে গ্লাসগো সম্মেলনে তাদের নিজ নিজ দেশের কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাদের পরিকল্পনা প্রকাশ করা শুরু করেছেন। এসব পরিকল্পনা নিয়ে সম্মেলনে একটি চূড়ান্ত রোডম্যাপ গ্রহণ করা হবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে জো বাইডেন ও সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। তবে তাদের কথাই শেষ কথা না, যতক্ষণ না পর্যন্ত জিনপিং ও পুতিন তা গ্রহণ করছেন।

উল্লেখ্য কার্বন নিঃসরণের হারে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। রাশিয়াও রয়েছে কার্বন নির্গমনের শীর্ষ তালিকায়। তবে চীনে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার যুক্তরাষ্ট্রের মাথাপিছু নিঃসরণ হারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। ২০০৬ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গমনকারী দেশ ছিল চীন। বর্তমানে বিশ্বে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, তার এক-চতুর্থাংশের বেশির জন্য দায়ী করা হয় চীনকে।

0 মন্তব্যসমূহ

-------- আমাদের সকল পোস্ট বা নিউজ বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা থেকে নেয়া - প্রতিটি পোস্টের ক্রেডিট সেই পোস্টের শেষ ভাগে দেয়া আছে।