নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার চৌমুহনীতে মন্দিরে হামলা ও লুন্ঠনের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানী কারওয়ানবাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. মনির হোসেন ওরফে রুবেল (২৮), জাকের হোসেন ওরফে রাব্বি (২০), মো. রিপন (২১) ও মো. নজরুল ইসলাম ওরফে সোহাগ (৩৬)।
এর আগে রবিবার (৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে ওই ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
জানা যায়, তারা প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করে। হামলা পর রুরেল, রাব্বী ও রিপন ২টি বস্তায় করে মন্দিরের বিভিন্ন পিতলের পূজার সামগ্রীসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। অপর আসামি সোহাগের সহযোগিতায় চুরি করা ধাতব সামগ্রীগুলো রুপান্তর করে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। মন্দিরে মালামাল লুট করার সময় গ্রেপ্তারকৃত রুবেলের ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। রুবেলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ১টি মামলা রয়েছে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে জনসাধারণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালায় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন চৌমুহনী এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটতরাজ চালায়। পরে ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
তিনি আরও বলেন, এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে মন্দিরের লুন্ঠিত পূজার সামগ্রী ৭টি পিতলের তৈরি প্রতিমা, ৩টি সিদুঁর কৌটা, ২০টি বাতির কৌটা, ২টি দ্রুপতি, ৫টি পঞ্চ বাতির দানি, ২টি হাত ঘন্টা, ১০টি স্ট্যান্ডসহ মুছি বাতি, ১টি কুলা, ৫টি পঞ্চ পাতার পল্লব, ১ টাকা মূল্যের ৫৫০টি বাংলাদেশী মুদ্রার কয়েন, ১১টি গ্লাস, ৫টি বাসন, ৭টি ঘটি, ৪টি ইমিটিশনের গলার হার, ২টি মালা, ৬টি ইমিটিশনের হাতের বালা, ৬ জোড়া ইমিটিশনের কানের দুল, ১টি ইমিটিশনের চেইন, ১২টি বিভিন্ন রকমের চুল বাঁধার কাঁকড়া, ৬টি নেইল পলিশ, ১ সেট পিতলের অলংকার, ২টি মঙ্গল সূত্র, ১টি আগরবাতি দানি, ১টি পিতলের ডাব, ১টি ওম, ২টি কাসন, ১ সেট আকমন পাত্র, নগদ ৩০৫ টাকা ও ৪০টি পিতলের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও মন্দিরে হামলায় অংশগ্রহণের সময় মো. মনির হোসেন ওরফে রুবেল এর পরিহিত গেঞ্জী ও লুঙ্গী এবং হামলায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করে। হামলা পরবর্তীতে মালামাল লুট করে।গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ